হাজার হাজার আন্তর্জাতিক ছাত্র যারা চিনে এমবিবিএস পড়তে গেছে তাদের অ্যাকাডেমিক পরিকল্পনা নিয়ে উদ্বিগ্ন। চিন এখনও তার বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে নথিভুক্ত বিদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য তাদের সীমান্ত খুলে দেয় নি এবং যারা সে দেশে এমবিবিএস প্রোগ্রাম অনুসরণ করছে তারা বাস্তব অভিজ্ঞতার অভাবের কারণে আরও বেশি ক্ষতির মুখে রয়েছে বলে দাবি করেছে ।

কোভিড প্রাদুর্ভাবের মধ্যে চিনে ভারতীয় দূতাবাসের প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, ২০,০০০ এরও বেশি ভারতীয় ছাত্র মেডিকেল ডিগ্রি নেওয়ার জন্য নাম নথিভুক্ত করেছিল। এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জনের জন্য ভারতীয়দের চিনে যাওয়ার একটি কারণ হল সাশ্রয়ী মূল্যের টিউশন ফি।

চিনে এমবিবিএস কোর্সের গড় বার্ষিক ফি হল ২১,০০০ চাইনিজ ইউয়ান (২.৫ লক্ষ ভারতীয় টাকা ), যা ভারতীয় বেসরকারি মেডিকেল কলেজে বার্ষিক ৪ লক্ষ থেকে ২০ লক্ষ টাকা ও আরও বেশি ।

এদিকে দিল্লি হাইকোর্ট চিনে ১৪০ জনের বেশি মেডিকেল ছাত্রদের ভারতে হাতে কলমে প্রশিক্ষণের বিষয়ে অনুমতির বিষয়ে কেন্দ্রের এবং জাতীয় মেডিকেল কমিশনের কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছে। করোনা মহামারি জারি থাকায় ১৪০ জনের বেশি মেডিক্যাল পড়ুয়া ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে তারা তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরতে পারেনি এবং তাদের ভারতে পড়ার সুবিধার বিষয়ে আবেদন জানিয়ে পড়ুয়ারা দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। এই বিষয়ে কেন্দ্রের অবস্থান স্পষ্ট করার আবেদন জানানো হয় দিল্লি হাইকোর্টের তরফে।

প্রধান বিচারপতি ডিএন প্যাটেল এবং বিচারপতি জ্যোতি সিং-এর একটি ডিভিশন বেঞ্চ এই বিষয়ে আইন ও বিচার মন্ত্রক, বিদেশ মন্ত্রক, স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পাশাপাশি এই আবেদনে কমিশনকেও নোটিশ পাঠিয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আবেদনে বলা হয়েছে, আবেদনকারীরা ছাত্র, সন্ত্রাসবাদী নন। ১৪৭ জন আবেদনকারী, যারা চিনের নিংবো ইউনিভার্সিটির মেডিকেল ছাত্র, তারা আদালতকে জানিয়েছে যে তারা ২০২০ সালের প্রথম দিকে করোনার কারণে ভারতে ফিরে এসেছিল। কিন্তু চিনের তরফে ছাত্র ভিসা না দেওয়ায় কারণে তারা তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরতে পারছেন না। ফলে ব্যাহত হচ্ছে তাঁদের ভবিষ্যত। ছাত্রদের তরফে দায়ের করা পিটিশনে বলা হয়েছে তাদের ট্রেনিং শেষ না হওয়ার কারণে তারা কোন রকম ইন্টার্নশিপের সুযোগও পাচ্ছেন না। এবং তাঁরা অন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তরিতও হওয়ার সূযোগ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন।

ছাত্রদের তরফে জানানো হয়, চিনের অন্তত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারতীয় ছাত্রদের ফিরিয়ে নেওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বিদেশে পড়ুয়া ডাক্তারি পড়ুয়াদের জন্য নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, তাতে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ভারতীয় ছাত্রদের তাদের নিজস্ব সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সম্পূর্ণ কোর্স, প্রশিক্ষণ এবং ইন্টার্নশিপ করা বাধ্যতামুলক। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের ফলে বিপাকে পড়তে হয়েছে ১৪৭ জন ডাক্তারি পড়ুয়াকে।